My Mother's wish: এতিম বাচ্চাদের খাওয়াব।
আমার মা বলে, তুই যখন দুনিয়াতে আসলি আল্লাহ আমাদের জীবনে বরকত দিল । আসলে
ব্যাপারটা এমননি ,নতুন জীবন এর সাথে সাথে আল্লাহ আমাদের জীবনের নতুন সুন্দরযের অনুভব করাই। আমারা বড় থাকে আর একটু বেশি বড় হয়ে উঠি । এই আমরাই দায়িত্বহীনতার বদলে দায়িত্বশীলে পরিণত হওয়ার চেষ্টাই মগ্ন হয়।
বিগত তিন মাস ধরে লিখার চেষ্টা করছি যে বেক্তিটা কে নিয়ে সে হল আমার মা। লিখার তেমন কিছু নাই কারন সবাই আমরা আমাদের এই বেক্তির ত্যাগ দেখেই বড় হয়ে থাকি।
কিন্তু আমরা আমাদের ব্যস্ত জীবনে কয়দিন এই নারীর কথা ভাবি?
আর এখন সোসাল মিডিয়ার যুগে বাচ্চার রুমের দরজা খুলার অপেক্ষাই থাকে এই মা গুলি। কেন যেন কাছে থাকেও আমরা বহু দূরে চলে যাচ্ছি দিনের পর দিন । বিদেশ না যেয়েও আমরা যেন সবাই ভিনদেশী।
কথাটি ভাবতে অবাক লাগে আমাদের জীবনে যে মানুষটি আমাদের কথা শিখাই তাকে আমরা বলতে হাজারো সংকোচন বোধ করি, “ মা তোমাকে ভালবাসি” । কথাটি অনেক সামান্য কিন্তু এই সামান্য কথার মাঝে অসামান্যের ছোঁওয়া এই মা জাতিটা খুঁজে বেরাই প্রতিক্ষণ ।
আমার মাকে আমি বলব না পৃথিবীর সব থাকে সুন্দর অথবা ভালমানুষ কারন ওইটা সবাই জানে। আমার দৃষ্টিতে দাখলে সব থাকে জিদ্দি ,অভিমানী ,মাঝে মাঝে একটু রাগি। মাঝে মাঝে একটু নরম এমন একটা মানুষ তিনি।
আমার জীবনে আমার মা কেমন এইটা বলতে গেলে বলা লাগে, অনেক ক্ষুধা লাগার পরে যদি কেউ খাওয়া দেয় আমাকে । ঐ খাবার খাওয়ার পরে যেই শান্তিটা লাগে , আমার জীবনে আমার মা হল ঐ শান্তি।
কিন্তু মাঝে মাঝে মনে হয় আমি তাঁর মা, কারন নিজের কথা কি করে যেন সব মানিয়ে ফেলে।
জীবনে দেওয়ার মত আমার কাছে কিছু নাই আসলে তাঁকে কিন্তু তের পরে একটু চেষ্টা। তাই ২০১৬ এর মে মাসের এক তারিখ, মাকে জিজ্ঞাসা করলাম, মা তোমার কাছে যদি কোন “জিনি“ থাকত তাহলে কি চেতে তুমি ? আমাকে একটা ইচ্ছে বল।
মাঃ আমি আমার বাবাকে ফিরে চেতাম।
আমার মুখের বারটা বেজে গেল কারন মৃত মানুষকে জীবিত করার ক্ষমতা আল্লাহ কাওকে দেই নাই।
আচ্ছা মা আমরা রিয়েলিসটিক কিছু চিন্তা করি একটু ?
মাঃ আচ্ছা, “ আমার অনেক ইচ্ছে আমি এতিম বাচ্চাদের খাওয়াব। কিন্তু আমার কাছে এতো টাকা নাই এখন । ভাবছি তোর নানার মৃত বার্ষিকী আসা পর্যন্ত টাকা জমাতে থাকি। “
মনের মাঝে আমার উরু-তুরু করছে । এই ইচ্ছে পুরনের আমার ক্ষমতা আল্লাহ আমাকে দিয়েছে । কিন্তু সমস্যা একটাই ছিল আমার বাজেট। ছাত্রী মানুষ আমি , অনেক কষ্ট বাজেট ৬০০০ টাকা আর আমার মনে হয় না আমি এতো ছোট কোন এতিমখানা পাবো যাতে ২০জন বাচ্চা থাকবে। তবুও চেষ্টা করে দেখা যাই ।
পরের দিন সকাল হতে না হতেই বেরিয়ে পরলাম সব থাকে ছোট এতিমখানার খুঁজে ঢাকা শহরে । আমি জানতাম না লালমাটিয়াতে অনেক বড় একটা এতিমখানা আছে আর দৈনিক এইখানে ৫০০জন এর উপরে খায় । তের পরে চলে গেলাম শ্যামলী কিছু ছোট ছোট এতিমখানা দাখতে কিন্তু আমার বাজেটে আসে না কোনটা ।
তাই প্লানটা একটু বদলে দিলাম। পরের মাসে মা এর জন্মদিন এর জন্য ৩০০০ রেখেছিলাম আমরা তিন ভাই বোন , জামা কিনব বলে , এখন ২০ টাকার “সুমিস হট কেক” খেতে হবে সবাইকে । আরও ১০০০ টাকা জমিয়ে , আমার এখন ১০০০০ টাকার প্লান।
কথায় বলে ইচ্ছে থাকলে উপায় হয়। হয়তো আমাদের বেলাতেও তেমন হইয়েছিল। ক্লান্ত আমি রাস্তাই আশার সময় সেঞ্জোসেফ স্কুল এর সামনে জ্যাম। বসে বসে রাস্তার গন্ধো আর গরম খাচ্ছি। হুট করে রাস্তার ওই পারে পানি কিনতে যেইয়ে দেখি হাতের ডানে কিছু বাচ্ছা টুপি পরে বের হচ্ছে সাথে এক ইমাম।
মুহূর্তের মাঝেই সব ক্লান্তি যেন কমেটের মত চলে গেল। আমি চিৎকার করে ডাকতে লাগলাম ইমাম ভাই, ও ইমাম ভাই। সামনে যেতে না যেতেই হাঁপাতে হাঁপাতে বলতে লাগলাম ভাই ৩০/৪০ জন বাচ্চা হবে আপনার কাছে ?
অবাক দৃষ্টিতে তাকানো লোকটা মনে হয় আমাকে পাগল মনে করছিল। তাঁর পরে ব্যাপারটা খুলে বলাই বলল, “আমাদের এতিমখানাই ৪০জন আছে সব মিলিয়ে ৫০” । আপনের বাজেট কত?
খুব উঁচা গলাই বললাম ১০০০০ টাকা (কারন আগে ৬০০০ ছিলতো তাই)। অনেক গর্বিত আমি আজ।
শুনে লোকটি বলল, “কম একটু কিন্তু চলবে”। আপনি মাংস কিনে দিয়েন সকালে আর বাকি টাকা আমাকে দিয়ে দিবেন, আমি সব ব্যবস্থা করব ।
৮ মে, রবিবার , ২০১৬। আজ আমার জীবনের সব থাকে সুন্দর দিনের এক দিন কারন আজ আমি আমার মাকে সামান্য কিছু টাকা দিয়ে অনেক সুখ দিব। মা জাতিটা মনে হয় এমনি সামান্যতেই তুষ্ট।
কিন্তু ব্যাপারটা সহজ মনে হলেও সহজ নয় কারন আমার মায়ের কোমর যেন বাড়িতে লেগে থাকে । বাড়ি থাকে কোন কারন বাদে বের করাটা অসাধ্য ব্যাপার সবার জন্য।
অবশেষে বললাম খালার বাসাই যাব চল। কিন্তু যাবে না তিনি।
পরে বললাম তাহলে চল মোহাম্মাদপুরে একটা নুতন মার্কেট দেখতে যাই।
মাঃ ভালো মায়েরা বিনা কারনে মার্কেটে ঘুরা ঘুরি করে না । তোকে আর কতবার বুঝাব?
অবশেষে দর্জির কাছের থাকে জামা নিয়ে আসতে যাব, এই বলে বাসা থাকে বের করার আমার শেষ চেষ্টা।
সব রান্না তখন শেষ। গেটের সামনে সবাই , তখন বাজে দুপুর ১টা। আমার আজও মনে আছে বাচ্চারা এতিমখানার বাইরে আমার মায়ের জন্য অপেক্ষাই ছিল।
যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মায়ের হাজার প্রশ্নের সম্মুক্ষিন আমি। কিন্তু চোখ ফিরাতেই এতো বাচ্চার মুখে হাসি আর হাতে একটা পোস্টার “ তোমাকে অনেক ভালবাসি মা “ লিখা দেখে চোখ থাকে যেন এই বুড়ির অশ্রুর নহর বইছে।
এতো খুশি আমার মাকে আমি কোন দিন দেখিনি। মা সব সময় বলে পাওয়ার থাকে দাওার মাঝে অনেক বেশি আনন্দ , যা আমি ঐ দিন বুঝেছি আরও ভালভাবে । মনের অজান্তে মায়ের ইচ্ছে পুরন করতে গিয়ে নিজের মনের শান্তি নিয়ে বাড়ি ফিরেছি আমি।
ধন্যবাদ মা তোমাকে , আমার জীবনের সব স্বপ্ন পুরনের জন্য আর আমার মা হয়ে দুনিয়াতে আসার জন্য।
Written by : Syeda Oyshe Sirajee
By Syeda Oyshe
Vote
Share
Votes: 47